১. টাইপিং দক্ষতা
মোবাইলে আমরা সবাই খুব সহজে টাইপ করতে পারলেও কম্পিউটারের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে একনাগাড়ে টাইপ করা কষ্টসাধ্য ব্যাপার। এটি কষ্টসাধ্য হলেও একেবারেই অসম্ভব কিন্তু নয়। সাধারণ কোন চাকরীতেও একজন কম্পিউটার অপারেটরের ইংরেজী টাইপ করার গতি ইংরেজিতে প্রতি মিনিটে ৪০টি শব্দ পর্যন্ত চাওয়া হয়।
তাই আপনাকে অবশ্যই টাইপিং কাজে মোটামুটি দক্ষ হতে হবে। তবে শুধুমাত্র ইংরেজীই না, পাশাপাশি নিজের ভাষাও কম্পিউটার ব্যবহার করে লিখতে জানতে হবে। শুধুমাত্র চাকরীই না, নিজের অনেক ব্যক্তিগত কাজও ওয়ার্ড প্রসেসিংয়ের মাধ্যমে করা সম্ভব।
আপনি হয়তো অ্যাসাইনমেন্টের জন্য একজন টাইপিস্টের শরণাপন্ন হন। কিন্তু আপনি নিজেই যদি ভালোভাবে টাইপ করতে পারেন, তাহলে বাইরের কাউকে দিয়ে টাইপ করানোর প্রয়োজন হবে না।
২. গাণিতিক সমস্যা সমাধান
যখন কেউ গাণিতিক সমস্যা কিংবা কোনো হিসাব-নিকাশের কথা বলে, তখন মাথায় আসে মাইক্রোসফট এক্সেল এর নাম। মাইক্রোসফট এক্সেল মূলত হলো একধরণের স্প্রেডশিট। সেখানে বিভিন্ন ধরণের টেবিলের মাধ্যমে কোনোকিছুর পরিসংখ্যান দেখানো হয়। যেমন: শেয়ার বাজারের সূচক, অফিসের কর্মীদের কাজে আসার সময়সূচী বা স্যালারী শীট কিংবা শিক্ষার্থীদের মার্কশিট ইত্যাদি।
এক্সেল শীট ব্যবহারের মাধ্যমে আপনি সহজ থেকে কঠিনতর গাণিতিক সমস্যাগুলো খুব সহজেই সমাধান করতে পারবেন। বেসিক এই কম্পিউটার স্কিল অর্জনের মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই ডাটা এন্ট্রির কাজ করতে পারবেন। আর বর্তমান আইসিটি খাতে ডাটা এন্ট্রির মতন কাজগুলোর চাহিদা কিন্তু প্রচুর।
৩. প্রেজেন্টেশনে দক্ষতা
আপনি ইউনিভার্সিটিতে পড়েন অথবা কোন প্রাইভেট ফার্মে জব করেন, উভয় জায়গাতেই আপনাকে প্রেজেন্টেশনে প্রস্তুত থাকতে হবে। সাধারণত কোন একটি নির্দিষ্ট প্রজেক্টে নিযুক্ত ব্যক্তিরা প্রেজেন্টশন করে করে প্রজেক্টটি সবকিছু বুঝিয়ে বলে।
তবে এই কাজটি আগে কাগজে কলমে এঁকে করার প্রচলন থাকলেও এখন সময় বদলেছে। প্রেজেন্টেশনে আধুনিকতা আনয়নের লক্ষে এ কাজ এখন বিভিন্ন সফটওয়্যারের মাধ্যমে করা হয়।
প্রোজেক্ট ডিসপ্লে এবং প্রেজেন্টেশন তৈরি করার ক্ষেত্রে দুইটি সফটওয়্যার আমাদের সবচেয়ে বেশি সাহায্য করে। আর তা হলো গুগল স্লাইড এবং মাইক্রোসফট পাওয়ার পয়েন্ট। এই দুইটি সফটওয়্যার প্রায় একই উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হলেও এদের মধ্যে বেশকিছু পার্থক্য রয়েছে।
মাইক্রোসফট পাওয়ারপয়েন্টে রয়েছে অসংখ্য টুলস। যার মাধ্যমে খুব সহজেই আপনি প্রেজেন্টেশনকে আকর্ষণীয় করে তুলতে পারবেন। অপরদিকে আর গুগল স্লাইডে খুব বেশি টুল না থাকলেও চটজলদি প্রেজেন্টেশন তৈরির কাজে এটি বেশ জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।
৪. গ্রাফিক্স ডিজাইন
আপনি কি আঁকাআঁকি করতে পছন্দ করেন? যদি উত্তর হয় হ্যাঁ, তাহলে কম্পিউটারের বেসিক স্কিল হিসেবে আপনার গ্রাফিক্স ডিজাইন শিখে নেয়া উচিত। গ্রাফিক্স ডিজাইন কম্পিউটার শেখার এমন একটি অংশ যা ছাড়া আপনার কম্পিউটার জ্ঞান একেবারেই অসম্পূর্ণ।
গ্রাফিক্সের বিভিন্ন সফটওয়্যার ব্যবহার করে আপনার প্রয়োজনীয় ম্যাগাজিন, ব্যানার ও পোস্টার তৈরি করতে পারেন নিমিষেই। শুধু তাই নয়, বন্ধুদের ছবিগুলো সুন্দর করে এডিট করে তাদের উপহারও দিতে পারেন। এতে করে আপনার গ্রাফিক্স চর্চা অব্যহত থাকবে এবং পরবর্তীতে আপনি এ কাজে আরো অভিজ্ঞ হয়ে উঠবেন।
গ্রাফিক ডিজাইনে ভালো দক্ষতার্জন করলে প্রেজেন্টেশনে এই স্কিল কাজে আসবে। বিভিন্ন ইফেক্ট ও ভিডিও ক্লিপ ব্যবহারের মাধ্যমে আপনার প্রেজেন্টেশনটি হয়ে উঠবে অন্যদের কাছে সহজবোধ্য ও আলাদা। আর আপনি যদি কম্পিউটারে এডোবি ফটোশপ আর ইলাস্ট্রেটর ব্যবহারে পারদর্শী হয়ে থাকেন
৫. ইমেইল পাঠানো এবং গ্রহণা
আপনি একটি কম্পিউটার চালাবেন আর ইমেইল সম্পর্কে জানেন না, তা কি হয়? কম্পিউটারের অন্যতম একটি বেসিক স্কিল হচ্ছে ইমেইল সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা রাখা। আপনাকে জানতে হবে কিভাবে একটি ইমেইল লিখতে হয়, সেটিকে প্রাপকের কাছে পাঠাতে হয় এবং গ্রহণ করতে হয়।
২০২০ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী বর্তমানে বিশ্বজুরে প্রায় ৪ মিলিয়ন ইমেইল ব্যবহারকারী রয়েছে, যা ২০২৫ সালে ৪.৫ মিলিয়নে পৌঁছাবে।
৬. সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং
সোশ্যাল মিডিয়া সাইটগুলো হলো নেটওয়ার্কিংয়ের সবচেয়ে কার্যকরী জায়গা। কারণ এইসব সাইটগুলোতে আমরা নানা ধরণের ও পেশার মানুষের সাথে পরিচিত হই। এইসব মানুষেরা আমাদের পরবর্তীতে নানান উপকারে আসতে পারেন।
তবে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং স্কিলসের মধ্যে আপনি কীভাবে কার সাথে কথা বলবেন, নেগেটিভিটি কীভাবে এড়িয়ে চলবেন- এগুলোও অন্তর্ভুক্ত।
সোশ্যাল মিডিয়া ওয়েবসাইট এবং অ্যাপগুলো মানুষের চেয়েও বেশি এক্টিভ থাকে! তবে এগুলো ব্যবহার করতে চাইলে খুব বেশি অর্থের প্রয়োজন হয় না। তাই শিক্ষার্থীরা প্রায় সবাই এগুলো ব্যবহার করে থাকে।
৭. বেসিক কম্পিউটার হার্ডওয়্যার
কম্পিউটারের বিভিন্ন সফটওয়্যারের কাজ শেখা শেষ হলে আপনার উচিত হবে এর বাহ্যিক দিকে মনোযোগ দেয়া। কম্পিউটারের কোনো পার্টস নষ্ট হয়ে গেলে তা বুঝতে পারা এবং ঠিক করার উপায় জানা জরুরি। যদিও বেসিক অবস্থায় কম্পিউটার হার্ডওয়্যারের সকল সমস্যার সমাধান আপনার পক্ষে সম্ভব হবে না।
আপনার জানা উচিত পিসি কীভাবে পরিষ্কার এবং ভাইরাসমুক্ত রাখা যায়। র্যাম, হার্ডডিস্ক, বেসিক ইনপুট এবং আউটপুট ডিভাইস সম্পর্কেও ভালো ধারণা রাখা প্রয়োজন। এসব টুকটাক কাজ নিজের জানা থাকলে সাধারণ কোন সমস্যার জন্য সার্ভিসিং সেন্টারে যাওয়ার প্রয়োজন পড়বে না। বরং আপনি নিজেই বসের মত এগুলো ঠিক করতে পারবেন।বং মেথডগুলো জানা জরুরি।
সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ